ভারতের ওপর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র!

যেসব দেশে মার্কিন পণ্য আমদানিতে শুল্ক আরোপ করা রয়েছে সেসব দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগে শুধু নির্দিষ্ট কিছু দেশের ওপর এই নীতি প্রয়োগের কথা বললেও ট্রাম্প এবার স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, এটি এখন সব দেশের জন্যই প্রযোজ্য হবে। ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী ভারতও ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কের আওতায় পড়বে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

খবরে বলা হয়, ট্রাম্প আগামী বুধবারকে ‘মুক্তি দিবস’ ঘোষণা করেছেন। ওইদিন তিনি নতুন করে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেবেন এবং এর আগে ঘোষিত কিছু বর্ধিত শুল্কের বাস্তবায়ন শুরু হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন ঘোষণায় বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে এবং বিভিন্ন দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্পের এই ‘লিবারেশন ডে শুল্ক’ পরিকল্পনা ঘিরে চলমান জল্পনার মধ্যে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট নিশ্চিত করেছেন যে, পারস্পরিক শুল্কের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

অন্য দেশগুলো আমেরিকান পণ্যের ওপর যে শুল্ক আরোপ করে, তার তালিকা তুলে ধরে লেভিট সোমবার বলেন, অন্যায্য বাণিজ্য নীতিগুলো বন্ধ হওয়া দরকার। হোয়াইট হাউস মুখপাত্র সাংবাদিকদের সামনে একটি কাগজ তুলে ধরেন, যেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, জাপান এবং কানাডার উচ্চ শুল্ক হার তালিকাভুক্ত ছিল। লেভিট বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমেরিকান দুগ্ধজাত পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক নিয়ে থাকে। জাপান আমেরিকান চালের ওপর ৭০০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছে। ভারত আমেরিকান কৃষি পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। কানাডা আমেরিকান মাখন ও পনিরের ওপর প্রায় ৩০০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমদানি শুল্ক চাপানোর ফলে সংশ্লিষ্ট দ্রব্যগুলোর দাম বহু গুণ বৃদ্ধি পায়। এ ধরনের শুল্ক হার আমেরিকান পণ্যকে এই বাজারগুলোতে প্রবেশে কার্যত অসম্ভব করে তুলেছে এবং বিগত কয়েক দশকে অসংখ্য আমেরিকান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কর্মসংস্থান নষ্ট করেছে। হোয়াইট হাউসের এই ঘোষণার পরে অনেকেই মনে করছেন, ভারত, কানাডা, জাপান কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের আওতাধীন দেশগুলো থেকে আমেরিকায় আমদানি হওয়া পণ্যে সমপরিমাণ শুল্ক চাপাতে চলেছেন ট্রাম্প। তবে এ বিষয়ে খুব বেশি কিছু স্পষ্ট করেননি হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘বুধবার যা বলার প্রেসিডেন্ট বলবেন, কিন্তু পারস্পরিক কর নেওয়া হবে এবং আমেরিকার নাগরিকরা সঠিক বিচার পাবেন।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন এই শুল্ক নীতির লক্ষ্য অন্যান্য দেশের উচ্চ শুল্ক হারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা এবং অশুল্ক বাধাগুলোর ক্ষতিপূরণ দেওয়া। যা দেশটিতে রপ্তানি প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখে ফেলছে। হোয়াইট হাউসের মতে, অন্যান্য দেশ বহুদিন ধরে আমেরিকাকে শোষণ করছে এবং তারা আমেরিকান শ্রমিকদের প্রতি তাদের অবজ্ঞা প্রকাশ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *