আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না : শেখ হাসিনা

কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে দেশকে স্বনির্ভর হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কে আমাদের ভিসা দেবে না, কে আমাদের নিষেধাজ্ঞা দেবে, তা নিয়ে মাথা ব্যথা করে লাভ নেই। গতকাল ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

এর আগে বিকেল ৪টার কিছু আগে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এ সময় রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধ হয়ে তাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান দলীয় নেতাকর্মীরা। পরে কার্যালয় উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। খবর বিডিনিউজের।

সমাবেশে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী খাদ্যমন্দা বাংলাদেশের মানুষকে যাতে স্পর্শ করতে না পারে সেজন্য আমাদের যে মাটি তা ব্যবহার করে এক ইঞ্চি জমিও যাতে অনাবাদী না থাকে, সেভাবে উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমরা নিজের পায়ে চলব। নিজের দেশকে আমরা গড়ে তুলব। কারও মুখাপেক্ষী হয়ে না। কে আমাদের ভিসা দেবে না, কে আমাদের স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দেবে ও নিয়ে মাথাব্যথা করে লাভ নাই। ২০ ঘণ্টা প্লেনে জার্নি করে আটলান্টিক পার হয়ে আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু যায় আসে না। পৃথিবীতে আরও অনেক মহাসাগর আছে, অনেক মহাদেশ আছে; সেই মহাদেশের সঙ্গে আমরা যাতায়াত করব, বন্ধুত্ব করব; আমাদের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে, উন্নত হবে, আরও চাঙ্গা হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ভোট যারা চুরি করে, জনগণের ভাগ্য নিয়ে যারা খেলেছে, আমি বলব যে, ওই সন্ত্রাসী দলের দিকে নজর দেন। সন্ত্রাসী দল হিসেবে কানাডার হাই কোর্ট বিএনপিকে ঘোষণা দিয়েছে। এই সন্ত্রাসী এবং দুর্নীতির দায়ে কিন্তু আমেরিকা তারেক জিয়াকে তাদের দেশে ভিসা দেয় নাই। তারাই এখন তাদের কাছে ধর্ণা দেয়। বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গল কোথায়, কল্যাণ কোথায়, সেটা আমরা খুব ভালো করে জানি। সেটা মাথায় রেখেই আমরা কাজ করে দেশকে উন্নয়নশীল দেশ করেছি। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হবে।

বিএনপি–জামায়াত নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা অবাধ নির্বাচন শিখল কিভাবে? তারা তো ভোট চুরি করা শিখেছে। তারা নিজেরা চোর তাই সবাইকে চোর সন্দেহে দেখে। জনগণের সম্পদ চুরি করে বিশাল সম্পদের মালিক তারা। জিয়ার মৃত্যুর পর ৪০ দিন পর্যন্ত দেখানো হলো অত্যন্ত সৎ ছিল জিয়া, কিছু রেখে যায়নি। ছেঁড়া গেঞ্জি আর সুটকেস ছাড়া। আর খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে যাদুর বাঙ হয়ে গেল! কোকো লঞ্চ ১, ২… সম্পদের পাহাড় গড়ল। তাহলে বাংলাদেশের মানুষকে তারা কি দিয়েছে?

বিএনপি নেতা তারেক রহমানের মানি লন্ডারিংয়ের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিং করেছে। ৪০ কোটি টাকা উদ্ধার করে আমরা আনতে পেরেছি। আর এখন দেশের বাইরে বসে চোরা টাকা আর জামায়াত–যুদ্ধাপরাধী মিলে আমাদের বিরুদ্ধে অপবাদ দেয়, ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু আমি বলতে চাই সত্যের জয় হবেই।

বিএনপির সন্ত্রাস আর দুর্নীতির কারণে ২০০৮ সালে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল সংখ্যগরিষ্ঠতা আর বিএনপি পেয়েছিল মাত্র ২৯টি আসন। তখন জনগণ কিন্তু তাদের ভোট দেয়নি। পাকিস্তান আমল থেকে খালেদা জিয়া, বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এদেশের মাটি ও মানুষের জন্য গড়ে উঠেছে আওয়ামী লীগ, কেউ ধ্বংস করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় এলেই মানুষের উন্নয়ন হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *