‘চীনের আছে এআই, আর ভারত বানাচ্ছে শুধু খাবারের অ্যাপ’

চীনসহ অন্যান্য দেশের স্টার্টআপ সংস্থা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে, কিন্তু ভারত সেই জায়গায় পিছিয়ে রয়েছে। ভারতের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম নিয়ে কড়া সমালোচনা করলেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। তার মতে, ‘আমরা ফুড ডেলিভারি অ্যাপ তৈরি করছি, সস্তা শ্রমকে কাজে লাগিয়ে ধনীরা যাতে বাইরে না গিয়ে বাড়িতে বসে খাবার খেতে পারে সেই ব্যবস্থা করছি। উল্টোদিকে, চীনারা ইভি, এআই এবং সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে কাজ করছে।’

‘স্টার্টআপ মহাকুম্ভ’-র মঞ্চ থেকে গোয়েল প্রশ্ন তোলেন, ভারত কি শুধু কম মজুরির চাকরির দিকেই মনোযোগ দেবে, নাকি প্রযুক্তিগত অগ্রগতির লক্ষ্যে এগোনোর চেষ্টাও করবে? মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কি শুধু আইসক্রিম বা চিপস বানাব? দোকানদারি করতেই কি এসেছি আমরা? ভারতের তরুণ প্রজন্ম কি শুধু খাবার সরবরাহকারী হতে চায়, নাকি তারা প্রযুক্তিগত পরিবর্তনেও অংশ নিতে চায়? এটাই কি ভারতের ভবিষ্যৎ? এটাকে স্টার্টআপ বলা যায় না, এটা শুধুই উদ্যোক্তা হওয়া।’

এখানেই চীনের প্রসঙ্গ তোলেন মন্ত্রী। বলেন, ‘ইভি ও ব্যাটারি প্রযুক্তি, সেমিকন্ডাক্টর এবং এআই, রোবোটিক্স এবং অটোমেশন, বৈশ্বিক সরবরাহ ও বাণিজ্য এবং প্রযুক্তি এবং অবকাঠামো নিয়ে নিরন্তর কাজ করে চলেছে চীন। কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী মনে করেন , বিদেশি সংস্থাগুলোর তরফে অংশীদারিত্ব কেনার পরিবর্তে ভারতীয় স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের জন্য আরও বেশি দেশীয় মূলধনের প্রয়োজন। মন্ত্রী আক্ষেপের সুরে বলেন, ’যখন আমি জানতে পারি যে ২৫ লক্ষ বা ৫০ লক্ষ টাকায় কোনো তরুণ প্রতিভাবানের স্টার্ট-আপের উজ্জ্বল ধারণা একটি বিদেশি কোম্পানির কাছে বিক্রি হয়ে গেছে, তখন আমার খারাপ লাগে। আসুন এই সিস্টেমে আরও কিছু দেশীয় মূলধন আনার চেষ্টা করি। আপনার মালিকানা বৃদ্ধি করুন এবং বজায় রাখুন।’

ভারতের প্রযুক্তি উদ্ভাবনের অভাব উদ্বেগজনক। দেশের ১.৫৭ লক্ষ স্টার্টআপের মধ্যে মাত্র হাজারটি সংস্থা ডিপ-টেক খাতে কাজ করছে, যা ‘অত্যন্ত দুঃখজনক পরিস্থিতি’ বলে মনে করেন মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। তার মতে, ভারতে নতুন স্টার্টআপগুলোর মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। ভারতে একাধিক বেটিং অ্যাপ তৈরির নিন্দা জানিয়ে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, প্রকৃত অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতার পরিবর্তে জুয়া মানুষকে আসক্ত করে তোলে। ভারতের বহু স্টার্টআপ বেটিং এবং ফ্যান্টাসি স্পোর্টস অ্যাপে মনোনিবেশ করেছে। যেখানে চীনারা শাইন, ডিজেআই এবং আলিবাবার মতো সাপ্লাই চেইন জায়ান্ট তৈরি করছে যা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যকে নিয়ন্ত্রণ করে।’

সূত্র : টাইমস অফ ইন্ডিয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *