একজন মানুষ টানা ৮ বছর সূর্যের আলো না দেখে, মুক্ত আলো বাতাসের স্পর্শ ছাড়া অন্ধকার কুঠুরিতে কী করে বেঁচে থাকে? হ্যাঁ থাকে। রাখে আল্লাহ মারে কে?
একটা তথ্য দেই, ছেলেটা আট বছরে একটা বার নিজের চেহারা আয়নাতে দেখার সুযোগ পায় নাই।
I repeat again
ছেলেটা আট বছরে একটা বার নিজের চেহারা আয়নাতে দেখার সুযোগ পায় নাই।
তিনি দিন গুনে মনে রাখতে পারেন নাই কত বছর ওখানে ছিলেন।
তার ধারনা ২৫/৩০ বছর,
পরে হাসপাতালে জানতে পারেন এখন ২০২৪ সাল।
মানে আট বছর, ভাবতে পারেন, আট বছর তার কেটেছে ৩০ বছর সমান।
ফ্যাসিবাদের বন্দীশালা থেকে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরেছেন আমাদের প্রিয় এই ভাতিজা। মনের ব্যাকূলতা থেকে দেখতে গিয়েছিলাম তাঁকে। এখনও সে কী অটুট মনোবল। গা শিউরে ওঠার মতো বন্দী জীবনের আংশিক গল্প শুনা হলো। বিস্তারিত লিখবো ইনশাআল্লাহ কোন এক সময়।
ছেড়ে দেওয়ার সময় তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়…
– বলতো আমরা কে?
উত্তর : জানিনা
– এত দিন কোথায় ছিলি?
– জানিনা।
-এটাই যাতে সবসময় মাথায় থাকে।
চোখ বাঁধা অবস্থায় গাড়ি থেকে নামিয়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে যাওয়ার সময় এভাবে প্রশ্ন ও শাসিয়ে যায় গুমকারীরা। গতকাল ভোররাতে উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরে রাজউকের ফ্ল্যাট প্রকল্পের কাছে বেড়ি বাঁধের কাছে নামিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। দীর্ঘ প্রায় এক ঘন্টা ওখানে পড়ে থাকার পর তিনি যখন অনুমান করতে পারেন ওরা চলে গেছে, তখন চোখের বাঁধন খুলে দেখতে পান নির্মাণাধীন সরকারি ফ্ল্যাটগুলোর কাছে আছেন তিনি। একজন মুসল্লির সহায়তায় ১১ নম্বর মোড়ের কাছে ইবনে সীনায় পৌঁছান। সেখানে একজনের কাছে পরিচয় দিয়ে শারিরীক চেকআপ করান। পরে পরিবারের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হন।
দীর্ঘ আট বছর অন্ধকার গহবরে থাকার প্রতিটি দিনই জীবনের শেষ দিন মনে হতো। গতকালও চোখ বেঁধে গাড়িতে তোলার পর ধরেই নিয়েছিলেন হত্যার জন্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাহাজ্জুদের নামাজরত অবস্থা থেকে চোখ বেঁধে গাড়ি তোলা হয়।