ইরানের পারমানবিক কর্মসূচি নিয়ে জল্পনা কল্পনা অনেক পুরানো। পারমানবিক কর্মসূচী নিয়ে ট্রাম্পের সাথে কথা কাটাকাটিও নিত্যদিনের সঙ্গী।
সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) এর প্রধান জানিয়েছেন ইরানের কাছে কোনো পারমানবিক অস্ত্র নেই। যদিও এ নিয়ে ইরানের কোন মাথা ব্যাথা নেই। নিজেদের পরমাণু কর্মসূচিকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে যখন তুমুল বিতর্ক তখন ইরান স্পষ্ট জানিয়ে দিল তাদের বৈজ্ঞানিক অর্জন কোনভাবেই আপসের বস্তু নয়। ইরানের রাজধানীতে পারমানবিক প্রযুক্তি দিবস উপলক্ষে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জানান, আমরা সংলাপের পক্ষে। কিন্তু সম্মান ও গর্ব নিয়ে। আমাদের অর্জনে আমরা কখনই আপস করবো না। বরাবরের মত এবারও ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে যেন এগুলো বললেন তিনি। যদিও ট্রাম্প পারমানবিক ইস্যু নিয়ে যা যা করেছেন বা করছেন তা মাসুদ পেজেশকিয়ানের কাছে কিছুই না।
ঐ অনুষ্ঠানে ইরান তাদের নতুন পরমাণু প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক সফলতা উপস্থাপন করে। যা পশ্চিমাদের, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী নীতির বিপরীতে একটু কৌশলগত বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে। পেজেশকিয়ান আরও বলেন, ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করতে চায় না। আপনি হাজার বার তদন্ত করতে পারেন, আমরা বোমা তৈরি করছি না। আমরা চাই বিজ্ঞান, আমরা চাই শক্তি।
তবে শুধু শান্তির বার্তা নয়, পেজেশকিয়ানের কণ্ঠে ছিল প্রতিবাদের বার্তাও। তিনি দাবি করেন আমাদের বিজ্ঞানীরা যেসব প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন তা নিয়ে আমরা যেকোনো আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রস্তুত। শত্রুরা যতবার আমাদের ক্ষতি করবে ততবারই আমরা আরও শক্তিশালি হয়ে উঠবো। এই বক্তব্যের মাধ্যমে ইরান যেন স্পষ্টভাবে একটি বার্তা দিল। ট্রাম্পের যুগের শুরু হওয়া এক তরফা নিষেধাজ্ঞা ও চুক্তি ভাঙার রাজনীতিকে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ান। তার সেই সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা বাড়ায় এবং ইরানকে আন্তর্জাতিকভাবে অনেকটাই কোণঠাসা করে তোলে। কিন্তু পেজেশকিয়ানের কথায় উঠে আসে এক নতুন আত্মবিশ্বাস। যেখানে শত্রুর আগ্রাসনকে মিথ্যা আশা বলে আখ্যা দেন তিনি।
মাসুদ পেজেশকিয়ান প্রশ্ন রাখেন, আমরাই কি শহর ধ্বংস করেছি? আমরাই কি সন্ত্রাস ছড়াচ্ছি? আমরাই কি যুদ্ধবিমান নিয়ে অঞ্চলে আগুন জালাচ্ছি? না। আমরা বলছি শান্তি চাই, নিরাপত্তা চাই। কিন্তু আমাদের চিন্তা ও উদ্ভাবনের পথ বন্ধ করতে দেবো না। তিনি আরও বলেন, ইরান কখনও কোনো বিদেশি শক্তির উপনিবেশ ছিল না। আর হবেও না।
বার্তাবাজার/এসএইচ