বাণিজ্য যুদ্ধে কেউই বিজয়ী হবে না : শি জিনপিং

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান ‘বাণিজ্য যুদ্ধে’ কেউই বিজয়ী হবে না বলে মন্তব্য করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি’ জিনপিং। পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এই প্রথম এ ইস্যুতে কথা বলেছেন শি’।

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এক সরকারি সফরে বর্তমানে বেইজিং আছেন। শুক্রবার তার সঙ্গে বৈঠক করেন শি জিনপিং। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমরা (যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের ঘটনায়) ভীত নই। গত ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চীনের উন্নয়নের প্রধান দুই সহায় আত্মবিশ্বাস এবং পরিশ্রম। কখনও অন্য কারো ওপর আমাদের নির্ভর করতে হয়নি। কোনো প্রকার অযৌক্তিক দমন-পীড়নে আমরা ভয় পাই না।”

“তবে এই যে একটি বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়েছে, তাতে কেউই বিজয়ী হবে না। উপরন্তু বিশ্বব্যবস্থার বিরুদ্ধে যদি কেউ যায়, তাহলে সে নিজেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।” চলতি বছর মার্চে প্রথমবার চীনের সব ধরনের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। পরে ২ এপ্রিল এক ঘোষণায় জানান, চীনের ওপর ধার্যকৃত শুল্ক ৩৪ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।

পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে তার পরের দিনই মার্কিন পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে বেইজিং। এতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হন ট্রাম্প এবং ৭ এপ্রিল সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক বার্তায় বলেন, বেইজিং যদি মঙ্গলবার ৮ এপ্রিলের মধ্যে এই শুল্ক প্রত্যাহার না করে— তাহলে সব ধরনের চীনা পণ্যের ওপর রপ্তানি শুল্ক আরও ৫০ শতাংশ বাড়ানো হবে এবং আজ ৯ এপ্রিল বুধবার থেকে তা কার্যকর হবে।

বেইজিং ট্রাম্পের হুমকিতে সাড়া না দেওয়ায় আজ ৯ এপ্রিল থেকে চীনা পণ্যের ওপর কার্যকর হয়েছে বর্ধিত শুল্ক। এতে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্যের ওপর মোট আরোপিত শুল্ক পৌঁছায় ১০৪ শতাংশে।

এই পরিস্থিতিতে গত ৮ এপ্রিল চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, ট্রাম্প যদি তার এই ‘অপমানজনক’ শুল্ক নীতি জারি রাখেন, তাহলে চীনও ‘শেষ পর্যন্ত’ লড়াই করবে। তারপর গতকাল ৯ এপ্রিল মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশে উন্নীত করে চীন। বেইজিংয়ের এ পদক্ষেপের পর বুধ ও বৃহস্পতি দুই দফায় চীনের ওপর ধার্যকৃত শুল্ক বৃদ্ধি করেন ট্রাম্প। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চীনা পণ্যের ওপর ধার্যকৃত শুল্পের পরিমাণ পৌঁছেছে ১৪৫ শতাংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *