টিউলিপের ‘অভিনব জালিয়াতির’ প্রমাণ পেয়েছে দুদক

গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডকে সরকারি জায়গা হস্তান্তরের বিনিময়ে ফ্ল্যাট উপহার নিয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। এর প্রভাবেই নিয়ম ভেঙে রাজউকের প্রায় দুই বিঘা জমি দখল ও প্লট-ফ্ল্যাটের অনুমোদন করিয়ে নেয় ইস্টার্ন হাউজিং। ঢাকায় ব্রিটেনের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের অভিনব জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ার এ কথা জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এ ঘটনায় আগামী সপ্তাহে টিউলিপ ও রাজউকের সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। রাজধানীর গুলশান-২ এর ৭১ নম্বর রোডের বাসার একটি ফ্ল্যাটের মালিক ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। গেল মার্চে দুদক ফ্ল্যাটের সন্ধান পেলে আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেটি জব্দের আদেশ দেয়।

তবে, ফ্ল্যাটের আদ্যোপান্ত খুঁজতে গিয়ে দুদক পেয়েছে পুরো প্রক্রিয়াজুড়েই অভিনব জালিয়াতির নানা ফিরিস্তি। ১৯৬৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক প্রধান বিচারপতি ইমাম হোসেন চৌধুরীর আবেদনে তৎকালীন ঢাকা ইম্রুভমেন্ট ট্রাস্ট, তাকে প্রায় দুই বিঘা জমি ৯৯ বছরের জন্য হস্তান্তর না করার শর্তে বরাদ্দ দেয়। কিন্তু ১৯৭৪ সালে থেকে দুই হাত ঘুরে সেই সম্পত্তি চলে যায় ইস্টার্ন হাউজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামের কাছে।

২০০০ সালে টিউলিপ সিদ্দিকের আপন খালা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রভাব খাটিয়ে ইস্টার্ন হাউজিংকে লিগ্যাল পার্সন হিসেবে আমমোক্তার অনুমোদন ও ৩৬টি ফ্ল্যাটে বিভাজনে তৎকালীন রাজউক সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে অনুমোদন করিয়ে নেন। বিনিময়ে একই প্লটে ২০১ নম্বর ফ্ল্যাটটি গ্রহণ করেন টিউলিপ। এ ঘটনায় টিউলিপ সিদ্দিক, সাবেক রাজউক কর্মকর্তা সরদার মোশাররফ হোসেনকে আসামি করে আগামী সপ্তাহে মামলা করতে যাচ্ছে দুদক। আর এই অনিয়মের দায় থাকলেও মারা যাওয়ায় আসামি করার সুযোগ নেই ইস্টার্ন হাউজিংয়ের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ও রাজউকের সাবেক কর্মকর্তা ডক্টর মুহাম্মদ সেলিমকে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন জানান, রাজউকের প্লট বরাদ্দ বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্ট কোনো বিভাগ এর দায় এড়াতে পারে না। এর আগে দুদকের পূর্বাচলে শেখ পরিবারের ৬০ কাঠার প্লট জালিয়াতি মামলার হুকুমের আসামি করা হয়েছিল টিউলিপ সিদ্দিককে।

 

বার্তাবাজার/এসএইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *