ফিলিস্তিন ইস্যুতে নীরবতা ভেঙে দৃপ্ত কণ্ঠে কথা বলতে শুরু করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। নিজ দেশে নানা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের প্রশ্নে তিনি আপোষহীন। সাম্প্রতিক একাধিক বক্তব্য ও কূটনৈতিক তৎপরতায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে—গাজা ইস্যুতে এবার শক্ত অবস্থান নিচ্ছে তুরস্ক।
ইন্দোনেশিয়ার মতো মুসলিম দেশের পাশে দাঁড়িয়ে গাজার পুনর্গঠনে সক্রিয় ভূমিকায় নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এরদোয়ান। তিনি জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনের ন্যায্য অধিকারের পক্ষে লড়াই থেকে কখনোই পিছিয়ে আসবে না তুরস্ক।
বিগত বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার জন্য ইসরায়েলকে এককভাবে দায়ী করে আসছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে গাজায় চলমান যুদ্ধ এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সহায়তা নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন এরদোয়ান। বাইডেন প্রশাসনের কোনো সদস্যকেই ছাড় দেননি তিনি। তবে ট্রাম্পের শাসনামলে দ্বিতীয় দফা গাজায় ইসরায়েলের হামলার সময় তুরস্ক তুলনামূলক নীরব থাকলেও, এবার দৃশ্যপট পাল্টাতে শুরু করেছে। কূটনৈতিক কৌশলে ইসরায়েলকে চাপে ফেলতে এখন সরাসরি সংঘাতে না গিয়ে, ঠাণ্ডা মাথায় চাল খেলছেন এরদোয়ান।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কেনার প্রস্তাব দিয়ে একদিকে আমেরিকার সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক মজবুত করছেন তিনি, অন্যদিকে সিরিয়া ইস্যুতে ইসরায়েলের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি বজায় রাখছেন। আসাদ সরকার পতনের পর সিরিয়ায় প্রভাব বিস্তারে তুরস্ক যে এগিয়ে যাচ্ছে, সেটিও স্পষ্ট। এরই মধ্যে সিরিয়ায় তুর্কি সেনা মোতায়েন নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সরাসরি যুদ্ধের হুমকি দিয়েছেন। তবে ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই ইস্যুতে তুরস্কের বিরোধিতা করার কোনো পরিকল্পনা তার নেই। এরদোয়ানকে ‘দুর্দান্ত নেতা’ বলেও অভিহিত করেছেন তিনি।
সবশেষে, গাজা ইস্যুতে মুসলিম দেশগুলোর ঐক্য গড়ে তুলতে নতুন করে উদ্যোগ নিচ্ছেন এরদোয়ান। গেল সপ্তাহে দেওয়া এক ভাষণে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন—ইসরায়েল গাজা দখল করে নিজের মানচিত্র বড় করার যে স্বপ্ন দেখছে, তা কোনোদিনই বাস্তব হবে না। এইসব পদক্ষেপে স্পষ্ট— গাজার জন্য এরদোয়ানের লড়াই শুরু হয়ে গেছে এবং তুরস্ক এখন প্রস্তুতির শেষ ধাপে।
বার্তাবাজার/এসএইচ