অভ্যুত্থানের পর বিপ্লবের নামে একটা ধান্দাবাজ প্রজন্ম তৈরি হয়েছে: নুরুল হক নুর

সম্প্রতি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ভিত্তিক ‘গ্লোবাল টক শো’ চ্যানেলের ‘প্রশ্নগুলো সহজ’ নামক টক শো অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, “অভ্যুত্থানের পর বিপ্লবের নামে একটা ধান্দাবাজ প্রজন্ম তৈরি হয়েছে।”

তিনি বলেন, “হঠাৎ করে সবাই দেশের নেতৃত্ব দিতে চায়, দেশ শাসন করতে চায়, সমাজসেবা করতে চায়। অভ্যুত্থানের পরে বিপ্লবের নামে আবার একটা ধান্দাবাজ, একটা সুবিধাবাদী তরুণ প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে এবং একটা তরুণ গোষ্ঠী তৈরি হচ্ছে, যাদের দ্বারা কিন্তু ওই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডসের সুবিধার পরিবর্তে অসুবিধার একটা অসৎকার জেনারেশন গড়ে উঠছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই যে সমন্বয়ক, এইটা, ওইটা, এখন রাজনৈতিক নেতা বনে যাচ্ছে। এই সমস্ত তরুণদেরকে কি আপনি গত ফ্যাসিবাদের ১৬ বছরে ১৬ দিন রাস্তায় দেখেছেন, এই কোটা আন্দোলনের বাইরে, যে তারা ১৬ দিন গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, ন্যায়বিচার, ইনসাফের জন্য লড়াই করেছে? ১৬ দিনও দেখেন নাই।”

নুরুল হক নুর বলেন, “সরকারি চাকরিতে কোটার সংস্কার যেটা ২০১৮ সালে আমরা শুরু করেছিলাম। ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত আন্দোলন করে প্রায় আট মাস আমরা প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা মুক্ত করেছিলাম। সেটা ছিল আন্দোলনের সীমিত সফলতা। সেটাকে শেখ হাসিনা চালবাজি করে কোর্টের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিল। সেটাকে নিয়ে আন্দোলন হয়েছে। সেই আন্দোলনে, যখন সরকার তার পুরানো রূপে সৈরতান্ত্রিকভাবে ছাত্রদের উপরে নির্মম, নিষ্ঠুর নির্যাতন করছে, পুলিশকে লেলিয়ে দিয়ে, ছাত্রলীগ-যুবলীগকে লেলিয়ে দিয়ে গুলি করে মানুষ মেরেছে, এটা ছাত্রদের অভিভাবক কিংবা কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ মেনে নিতে পারে নাই। তারা এই অন্যায়ের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিল এবং একটা গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন সেটা আবার কেউ কেউ বলছেন যে এটা মেটিকুলাসলি ডিজাইন হয়ে, এর মাস্টারমাইন্ড আছে।”

তিনি আরও বলেন, “ডিসি অফিসে, এসপি অফিসে, ইউএন অফিসে, ওসির অফিসে, সচিবালয়ে এই যে তরুণ লিডাররা তৈরি হচ্ছে, এরা কিন্তু আওয়ামী লীগের চেয়ে জঘন্য এক লিডারশিপ তৈরি করছে। এবং এরা যদি সুযোগ পায়, দেশকে আওয়ামী লীগের চেয়ে লুইট্টা-পুইট্টা খাবে।”

সবশেষে তিনি বলেন, “তরুণ লিডারদের মূল সেন্টারটা কী? রাজনীতি। সাইনবোর্ডটা তো রাজনীতি। রাজনীতি করছে, সে এখন দল গঠন করবে, সে নেতা হবে, এলাকায় নির্বাচন করবেই। এবং সে আন্দোলন করেছে, সে সমন্বয়ক। অ্যাকচুয়ালি যে একটা পরিস্থিতি তৈরি করছে, এইটা যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, এটাও আবার আমাদের জন্য একটা বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *