চিকেন নেকে রাশিয়ার এয়ার ডিফেন্স, শিলিগুড়ি করিডোর দখলে বাংলাদেশ -চীন-রাশিয়া জোট!

ভারতের জন্য বড় ধরনের নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি করেছে বাংলাদেশ-চীন সামরিক সহযোগিতা। সাম্প্রতিক গোয়েন্দা রিপোর্টে জানা গেছে, বাংলাদেশের লালমনিরহাটে চীন একটি আধুনিক বিমানঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা করছে, যেখানে পাকিস্তানও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে। এই খবর পেয়েই নরেন্দ্র মোদি সরকার রাতের ঘুম হারাম করেছেন। বিশেষ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর এবং বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে চীনের বাড়ন্ত সম্পর্ক ভারতকে চিন্তিত করে তুলেছে।

শিলিগুড়ি করিডোর সুরক্ষায় ভারতের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই সংকীর্ণ ভূখণ্ডটি ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত, যা ভারতের মূল ভূখণ্ডকে উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করেছে। রাশিয়ার কাছ থেকে কেনা এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এখানে মোতায়েন করা হয়েছে, যা ২০ থেকে ২২ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় নজরদারি করতে পারে। ভারতের সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশে চীনা ঘাঁটি স্থাপিত হলে এটি সরাসরি শিলিগুড়ি করিডোরের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলবে।

চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে ভারতের গভীর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ ত্রিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার হওয়ায় দিল্লি চিন্তিত। বিশেষ করে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের আওতায় বাংলাদেশে বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পকে সামরিকায়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার সম্ভাবনা ভারতকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে এবং ড্রোন চলাচল সীমিত করেছে।

বাংলাদেশের নতুন সরকারের নীতিতে ভারতের অস্বস্তি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা বাড়ার সম্ভাবনা ভারতের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত ইতিমধ্যেই সীমান্ত এলাকায় সেনা উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে চীনা সামরিক উপস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক সমীকরণ আমূল বদলে দিতে পারে।

ভারতের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও ভারত সীমান্ত এলাকায় আধুনিক রাডার সিস্টেম স্থাপন করেছে। সামরিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সীমান্তের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে এখন কোনো ড্রোন উড়তে পারবে না। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে সফর করেছেন এবং স্থানীয় সামরিক কমান্ডারদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন।

এই সংকট দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বাংলাদেশে চীনা সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করা হলে তা ভারতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করবে। অন্যদিকে, চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ জোট গঠনের সম্ভাবনা ভারতের কূটনৈতিক মহলে নতুন করে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী দিনগুলোতে এই অঞ্চলে সামরিক ও কূটনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে।

 

বার্তাবাজার/এসএইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *