আমেরিকার গৌরব এফ-১৬ কে ধুলোয় মিশিয়ে দিল রাশিয়া

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গর্বিত চতুর্থ প্রজন্মের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান এফ-১৬ যুদ্ধক্ষেত্রে গেম চেঞ্জার হিসেবে পরিচিত ছিল। প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলার জন্য প্রযুক্তিগতভাবে অত্যন্ত উন্নত এই ফাইটার জেট পশ্চিমা শক্তির সামরিক শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে এটি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। 

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের আশ্বাসে পশ্চিমা দেশগুলি ইউক্রেনকে এই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান সরবরাহ করেছিল। এরপর থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনী এফ-১৬ ব্যবহার করে রুশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপারেশন চালাচ্ছিল। কিন্তু রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কাছে এফ-১৬ কার্যকর হতে পারেনি।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রোববার এক ব্রিফিংয়ে জানায় যে, তাদের সেনাবাহিনী ইউক্রেনে মোতায়েনকৃত একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। তবে বিমানটি ধ্বংসের বিস্তারিত বিবরণ তারা প্রকাশ করেনি। এর আগে, শনিবার ইউক্রেনের বিমানবাহিনীও স্বীকার করে যে, তাদের একটি এফ-১৬ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে এবং পাইলট পাভেল নিহত হয়েছেন।  

এটি এফ-১৬ মডেলের দ্বিতীয় বিমান, যা রাশিয়ার হামলায় ধ্বংস হয়েছে। গত আগস্টেও একটি এফ-১৬ বিমান রুশ সেনাদের হামলায় পড়েছিল। ইউক্রেনীয় সরকারি সূত্রে জানা গেছে, রাশিয়া এই বিমানটি ভূপাতিত করতে *এস-৪০০ বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র* বা *আর-৩৭ এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল* ব্যবহার করেছে।

এফ-১৬ একটি বহুমুখী যুদ্ধবিমান, যা জেনারেল ডায়নামিক্স দ্বারা ১৯৭০-এর দশকে ডিজাইন করা হয়। সময়ের সাথে সাথে একাধিক আপগ্রেড পেয়ে এটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন হয়ে উঠেছে। এটি সোভিয়েত যুগের মিগ-২৯ এবং সু-২৭-এর চেয়ে অনেক বেশি কার্যকরী বলে বিবেচিত হয়। তবে এই বিমান চালনার জন্য উচ্চমানের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন, যা ইউক্রেনীয় পাইলটদের পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই।  

ইউক্রেনীয় পাইলটরা ডেনমার্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রোমানিয়া-তে প্রশিক্ষণ নিলেও যুদ্ধের চাপে স্বল্প প্রশিক্ষণ নিয়েই তাদের মিশনে যেতে হচ্ছে। সামরিক বিশ্লেষকরা এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, কারণ অপূর্ণ প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানের কার্যকারিতা ও নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলে।  

এই ঘটনায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট  জেলেনস্কি রাশিয়ার সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করেছেন এবং একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এফ-১৬-এর মতো অত্যাধুনিক বিমান ধ্বংসের ঘটনা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যা পশ্চিমা সামরিক সহায়তার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *