ট্রাম্পের কথা না শোনায় বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২.২ বিলিয়ন ডলারের তহবিল স্থগিত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বিপাকে পড়েছে বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ড। বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা পরিবর্তনে রাজি না হওয়ায় ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের জন্য নির্ধারিত ২.২ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল এবং ৬০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত করেছে।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিবিসির প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, হোয়াইট হাউস সম্প্রতি হার্ভার্ডের কাছে একটি দাবিপত্র পাঠায়, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা, নিয়োগ এবং ভর্তি প্রক্রিয়ায় পরিবর্তনের আহ্বান জানানো হয়। দাবি করা হয়, এসব পদক্ষেপ নিলে ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ দমন করা সহজ হবে। তবে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয়, তারা প্রশাসনের দাবিতে সাড়া দেবে না।

হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার এ বিষয়ে এক খোলা চিঠিতে বলেন, সরকার আমাদের স্বাধীনতা সীমিত করতে চায়। আমরা তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করব না, কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিগত স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকার অক্ষুণ্ন রাখা আমাদের দায়িত্ব।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশাসনের দাবি মানলে বিশ্ববিদ্যালয়টির স্বায়ত্তশাসন ও একাধিক সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপের সুযোগ পেত যুক্তরাষ্ট্র সরকার। হার্ভার্ডের অবস্থান প্রকাশের পরপরই শিক্ষা দপ্তর অনুদান স্থগিতের ঘোষণা দেয়। অপরদিকে মার্কিন শিক্ষা দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। ইহুদি শিক্ষার্থীদের হয়রানির ঘটনাও বেড়েছে। এসব বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে সরকারি সহায়তা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিযোগ, গত বছর গাজায় যুদ্ধ চলাকালে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ হয়। তখন এসব প্রতিষ্ঠানে ইহুদি শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি। হার্ভার্ড সেই সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে বলেও তার অভিযোগ। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত শুধু হার্ভার্ড নয়, বরং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতার ওপর বড় ধরনের চাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

 

বার্তাবাজার/এসএইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *