প্রবাসীদের দাবি না মানলে রেমিট্যান্স শাটডাউনের হুমকি

বিদেশে কোনো প্রবাসীর মৃত্যু হলে রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে মরদেহ আনতে হবে। একজন প্রবাসী ছুটিতে দেশে এসে কিংবা প্রবাসে কোনো কারণে মারা গেলে বা কর্মক্ষেত্রে শারীরিক পঙ্গুত্ববরণ করলে এককালীন তার পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বিমানবন্দরে কোনো ধরনের লাগেজের ক্ষতি হলে প্রতিটা খালি লাগেজের জন্য ২০ হাজার টাকা জরিমানা সাতদিনের মধ্যে দিতে হবে। প্রবাসীরা এমন ১১ দাবি জানিয়েছে। তাদের দাবি পূরণ না হলে রেমিট্যান্স না পাঠানোর হুমকি দিয়েছে। প্রেসক্লাবে রোববার (১ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসীরা এই ১১ দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে ওমান প্রবাসী কামরুল আলম বলেন, দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখলেও প্রবাসীদের দাবি কখনো বাস্তবায়ন হয় না। বিদেশে দূতাবাসগুলো পাসপোর্ট ছাড়া তেমন কোনো বিষয়ে ভূমিকা রাখে না। কোনো প্রবাসী মারা গেলেও তাদের কোনো ধরনের সহায়তা দেয় না বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো। বিগত সময়ের নিয়োগ করা সকল দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সরিয়ে দিতে হবে। আমিরাতে যারা জেলে আছেন তাদের জন্য কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেনকে দায়ী। তার কারণেই প্রবাসীরা জেলে আছেন। তিনি তাদের জেলে পাঠিয়েছেন। মূলত দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করায় তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। অবিলম্বে সেখানে আটকদের কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় মুক্তি দিতে হবে।

১৫ বছর রানিং প্রবাসীরা এককালীন দেশে চলে এলে তাদের যুক্তিসংগত প্রবাসী অবসর ভাতা দিতে হবে। একজন প্রবাসী ছুটিতে দেশে এসে কিংবা প্রবাসে কোনো কারণে মারা গেলে বা কর্মক্ষেত্রে শারীরিক পঙ্গুত্ববরণ করলে এককালীন তার পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। প্রত্যেক প্রবাসীর পরিবারকে বিশেষ স্মার্ট কার্ড দিতে হবে। ওই স্মার্ট কার্ড দ্বারা বাংলাদেশের সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ প্রত্যেকটি সেক্টরে যেমন- মেডিকেল ট্রিটমেন্ট, ইউনিয়ন অফিস, থানা, সিটি করেপোরেশন, ভূমি অফিস, পরিবহন সেক্টর থেকে শুরু করে সব নাগরিক সেবায় প্রবাসীর পরিবার যেন সুফল ভোগ করতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, শুধু পাসপোর্ট, ভিসা কপি অথবা আকামা কপি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রবাসীকে সহজশর্তে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এবং সরকার নিয়ন্ত্রিত বা মালিকানাধীন অন্য ব্যাংক থেকে বিনা সুদে বা সহজ শর্তে হাউজ লোন, ব্যবসায়িক লোনসহ অন্য লোন দিতে হবে। কোনো কারণে বাংলাদেশে কোনো প্রবাসীর নামে মামলা-মোকাদ্দমা হলে তা দ্রুত নিষ্পত্তির বিধি বিধান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৯০-১২০ দিন হতে পারে। প্রবাসে কোনো সমস্যা হলে বাংলাদেশ দূতাবাস সব ধরনের সহযোগিতা করতে হবে। প্রবাসীদের জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা সৃষ্টি করতে হবে। অসুস্থতার কারণে কোনো প্রবাসী দেশে এলে বাংলাদেশের সব সরকারি মেডিকেলে উন্নত চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। প্রতি প্রবাসী পরিবারের নিরাপত্তা দিতে হবে। প্রবাসী পরিবারের সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রবাসী পরিবারের সামাজিক অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র বা সরকার উপযুক্ত নীতিমালা গ্রহণ করবে। বিমানবন্দরে কোনো ধরনের লাগেজের ক্ষতি হলে প্রতিটা খালি লাগেজের জন্য ২০ হাজার টাকা সাতদিনের মধ্যে দিতে হবে।

অভিবাসনের ক্ষেত্রে এবং বিদেশ যাত্রায় হয়রানি প্রতিরোধ করতে হবে এবং বিমানবন্দরে জটিলতা নিরসনে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রবাসীরা বাংলাদেশে আসতে এবং বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিমানবন্দরে যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতায় পড়েন তার স্থায়ী নিরসন করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *