বিচারপতি মানিকের সমালোচনা করায় ইমাম বরখাস্ত

আন্দোলনকারী ছাত্রদের সহযোগিতা ও সরকার পতনের পর সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সালমান এফ রহমানের সমালোচনা করে জুমার খুতবায় বক্তব্য রাখায় নড়াইলে এক ইমামকে বরখাস্তের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ইমাম মুফতি এম হেদায়েত হোসাইন নড়াইল পৌরসভার উজিরপুর দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদে ইমামতির দায়িত্বে ছিলেন।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) তাকে বরখাস্তের পর আজ সোমবার ভুক্তভোগী ইমামকে মসজিদ থেকে বের করে দেয়া হয়। তিনি মসজিদে ইমামতির পাশাপাশি মসজিদ সংলগ্ন উজিরপুর ইসলামিয়া নুরানী মাদরাসার শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। জানা গেছে, ভুক্তভোগী ইমাম মুফতি এম হেদায়েত হোসাইন নড়াইল জেলা সদরের হবখালী ইউনিয়নের কাগজীপাড়া গ্রামের আব্দুল গফফার মোল্যার ছেলে। তিনি বিভিন্ন সময় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভি, এনটিভি, বাংলাভিশন, চ্যানেল২৪ ও দেশটিভিতে বিভিন্ন ইসলামি অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় ইসলামি কলাম ও কয়েকটি ইসলামি পুস্তিকার লেখক।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুফতি হেদায়েত হোসাইন নড়াইলে ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন। তখন থেকেই তাঁকে চাপ দিতে থাকে মসজিদ কমিটির লোকজন। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন গত ৫ আগস্ট মসজিদের মুসল্লিদের মিষ্টিমুখ করান তিনি। সর্বশেষ গেল শুক্রবার (৩০ আগস্ট) জুমার খুতবায় দুর্নীতিবাজ মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে বিশেষত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প ও বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও বিতর্কিত সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের সমালোচনা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হন মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজামউদ্দিন খান নিলুর ব্যক্তিগত সহকারী আনিসুর রহমান।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রবিবার ইমাম হেদায়েত হোসাইনকে মসজিদ ও মাদরাসার দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করেন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান। এরপর আজ সোমবার সকাল আটটার দিকে তাকে মসজিদ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ইমাম মুফতি হেদায়েত হোসাইন বলেন, আমার ওপর অর্পিত ইমামতি ও মাদরাসার শিক্ষকতার দায়িত্ব আমি যথাযথভাবে পালন করেছি। আল্লাহর কসম করে বলতে পারি ছুটি ছাড়া একদিনও একটা ক্লাস বাদ দেইনি। নিয়মিত নামাজ পড়িয়েছি। কিন্তু বিচারপতি মানিক ও সালমান এফ রহমানের সমালোচনা করে জুমার খুতবায় বক্তব্য রাখায় আমাকে পদচ্যুত করা হলো।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আহত হওয়া শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার জন্য আমি অর্থ সংগ্রহ করেছিলাম। তখন থেকেই মসজিদ কমিটির আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হই আমি। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।

এ বিষয় জানার জন্য মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা আনিসুর রহমানকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *