বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাদকবিরোধী অভিযানে ডিজিএফআই কর্মকর্তা হত্যা মামলায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) প্রধান আতাউল্লা আবু আম্বার ওরফে জুনুনিকে দুটি মামলায় আদালতে হাজির করা হয়।
আদালত প্রাঙ্গণে আতাউল্লা আবু আম্বার ওরফে জুনুনি সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গারা আরাকানে জমি পাবে। আমরাই পাব ইনশাআল্লাহ। আরাকানের জমিন আমাদের। এ সময় তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের মানুষ ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ইউনূস সরকার ভালো’। সোমবার সকালে প্রথমে আতাউল্লাকে বান্দরবানের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরুণ পালের আদালতে চলমান মামলায় হাজির করে পুলিশ। পরে বান্দরবান জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আমলি আদালতের বিচারক নাজমুল হোসেনের আদালতে তদন্তাধীন মামলায় হাজির করা হয়। আদালত অভিযোগ শুনে আসামিকে ফের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বান্দরবান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আইনজীবী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী জানান, ডিজিএফআই কর্মকর্তা হত্যা মামলাসহ দুটি মামলায় প্রধান আসামি আরসা প্রধান আতাউল্লাকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে ফের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আদালতের তথ্যমতে, ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের কাছে মাদকবিরোধী অভিযানে নামে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ডিজিএফআইয়ের বিশেষ একটি দল। তখন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা রিজওয়ান রশদী। গুলিবিদ্ধ হন র্যাব-১৫ কক্সবাজারের সদস্য সোহেল বড়ুয়া। গুলিতে শূন্যরেখার আশ্রয় শিবিরের রোহিঙ্গা তরুণী সাজেদা বেগমও (২০) নিহত হন।
এ ঘটনায় গত বছরের ২৩ নভেম্বর রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় ডিজিএফআই কক্সবাজার কার্যালয়ের মাঠ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন মামলা করেন। আরসার প্রধান কমান্ডার আতাউল্লাহ আবু আম্বার ওরফে জুনুনিকে প্রধান করে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ৬৬ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। পরে চলতি বছরের ১৩ নভেম্বর মামলার কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মাহাফুজ ইমতিয়াজ ৫১ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বান্দরবান কোর্ট ইন্সপেক্টর রেজাউল করীম মজুমদার জানান, দুটি মামলায় দায়রা জজ আদালত এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আরসা প্রধানসহ কারাগারে থাকা ১০ জন আসামিকে হাজির করা হয়। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলায় অভিযুক্ত ৫০ জন আসামির মধ্যে অন্যরা এখনো পলাতক রয়েছে।
বার্তাবাজার/এসএইচ