বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন অভিযোগ করেছেন, কিছু উপদেষ্টার বক্তব্যে মনে হচ্ছে তারা পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা পোষণ করছেন। তিনি বলেন, “তাদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার খায়েশ জন্ম নিয়েছে। তারা বলছেন, জনগণ নাকি তাদের পাঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চায়—এই কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। সত্যিটা হলো, জনগণ একটি জবাবদিহিমূলক সরকার চায়। জনগণ ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায় এবং ভোটের মাধ্যমে সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়।”
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং কলেজ মাঠে এক সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে এসব কথা বলেন রিপন। সমাবেশটি আয়োজন করে মুন্সীগঞ্জ জেলা যুবদল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তফা এবং সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান খান।সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাসুদ খান, উপজেলা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মোশারফ হোসেন, উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি রোকেয়া বেগম প্রমুখ।
আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “বাংলাদেশের সংবিধানে স্পষ্টভাবে বলা আছে, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন এবং তারাই সরকার গঠন করবেন। তারপর সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। সংবিধানে এর বাইরে কিছু লেখা নেই। কিন্তু গত ১৫ বছর ধরে দেশে এই সংবিধান লঙ্ঘিত হয়ে আসছে।” তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালের আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। এই পরিবর্তনের জন্য মানুষ সংগ্রাম করেছে, জীবন দিয়েছে, এবং বিপ্লব হয়েছে। তাই সেই শহীদদের রক্তের চেতনা আমাদের হৃদয়ে ধারণ করতে হবে।”
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে রিপন বলেন, “বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন ও সালাম জানাই। তিনি নিরলস পরিশ্রম করছেন। তাঁর গৌরবদীপ্ত নাম ও ব্যক্তিত্বের কারণেই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হচ্ছেন—এটা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক বিষয়। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, বাংলাদেশে এমন একটি নির্বাচন উপহার দেবেন, যা বিশ্বে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সেই নির্বাচনের জন্য আমরা দেশের মানুষ অপেক্ষা করছি।”
বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি, কেউ কেউ ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের নিয়ে দল ভারী করার চেষ্টা করছেন। বিএনপিতে কি লোকের অভাব? কোটি কোটি মানুষ বিএনপিকে সমর্থন করে। তাহলে পতিত সরকারের লোকদের কেন দলে নেওয়া হচ্ছে? যারা আওয়ামী লীগের নেতাদের দলে টানবেন, তাদের বয়কট করতে হবে—সে যত বড় নেতাই হোন না কেন। অন্যায়কারীদের গণশত্রু হিসেবে বিবেচনা করা হবে।”
তিনি আরও জানান, “এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সরাসরি নির্দেশনা রয়েছে—যাঁরা এসব অপকর্মে জড়িত, তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও করা হবে।”
বার্তাবাজার/এসএইচ