এবারের ঈদের লম্বা ছুটি শেষে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকামুখী কর্মজীবী মানুষের উপচে পড়া ভিড় লেগেই আছে। ট্রেনের ভেতরে স্থান না পেয়ে শত শত যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছাদেই ছুটছেন গন্তব্যের পথে। তবে শত চেষ্টা করেও ট্রেনের ছাদে বিপজ্জনক যাত্রা বন্ধ করতে পারছে না রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীরা।
রোববার (৬ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। স্টেশনে দেখা যায়, শত শত যাত্রী ট্রেনের অপেক্ষায় প্ল্যাটফর্মে অবস্থান করছেন। নারী-পুরুষসহ শিশুদেরও ট্রেনে উঠতে বেগ পেতে হচ্ছে। অনেকেই ট্রেনের ভেতরে স্থান না পেয়ে এবং টিকিট না পেয়ে ট্রেনের ছাদে চড়েই রওনা দিয়েছেন নিজ নিজ গন্তব্যে। এ সময় সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীরা বিপজ্জনক ছাদ ভ্রমণ পরিহারে বার বার সতর্ক করছেন। কিন্তু এই সতর্ক বার্তায় কান না দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা ট্রেনের ছাদে অবস্থান নিয়েছেন। নারী-পুরুষের পাশাপাশি শিশুদেরও ট্রেনের ছাদে দেখা গেছে।
জানতে চাইলে ময়মনসিংহ জিআরপি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকতার হোসেন বলেন , বিপজ্জনক ছাদ ভ্রমণ পরিহারের জন্য মাইকিং করে বার বার সতর্ক করা হচ্ছে। কিন্তু ঈদের ছুটি শেষে ঢাকামুখী মানুষের বাড়তি চাপের কারণে ছাদ ভ্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না।
তিনি জানান, গত কয়েকদিনের ন্যায় আজকেও ট্রেনে যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে যাওয়া ঢাকাগামী সবকটি লোকাল কমিউটার ট্রেনে যাত্রীদের ভিড় ছিল অনেকটাই বেশি। তারপরও আমরা যাত্রীদের যাত্রা নিরাপদ করতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। সিডিউল বিপর্যয় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ট্রেন যাত্রায় সিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে তা বলা যাবে না। তবে যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপের কারণে ট্রেনগুলো ধীরে চলছে। এতে নির্দিষ্ট গন্তব্যে ট্রেনগুলো পৌঁছাতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। এটি সিডিউল বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে না।
এ সময় কথা হয় স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষারত যাত্রীদের সঙ্গে। তারা জানান, ট্রেনগুলো কিছুটা বিলম্বে আসছে। এজন্য আমরা স্টেশনে অপেক্ষা করছি। তবে আমাদের সামনেই অনেকে ট্রেনে সিট বা টিকিট না পেয়ে ছাদে চড়ে যাত্রা করেছেন। আবার অনেকেই ঠাসাঠাসি করে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন গন্তব্যের পথে। ঢাকায় ফেরার তাগিদে এমনটি হচ্ছে বলেও জানান যাত্রীরা। এই বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ময়মনসিংহ রেলওয়ের স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট মো. নাজমুল হক খানের বক্তব্য জানা যায়নি।
তবে স্টেশন সংশ্লিষ্টরা জানান, সাপ্তাহিক ছুটির কারণে দুই-একটি ট্রেন বন্ধ রয়েছে। সেই সঙ্গে ঢাকামুখী মানুষের চাপ থাকায় ট্রেন যাত্রীদের উপস্থিতি অনেকেটাই বেশি। কারণ লোকাল ট্রেনগুলোতে সাধারণত নিন্ম ও মধ্যবিত্ত আয়ের যাত্রীরা চলাফেরা করে। ফলে ঈদের ছুটি শেষে স্বল্প খরচে ঢাকায় ফিরতে লোকাল ট্রেনগুলোতে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে।