শ্রীলংকাকে দেওয়া দ্বীপ এখন ফেরত চাইছে ভারতীয়রা

কচ্ছতিভু দ্বীপটি ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার একটি সংবেদনশীল ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। ১৯৭৪ সালে ভারত শ্রীলঙ্কার সাথে একটি চুক্তির মাধ্যমে এই ১৬৩ একরবিশিষ্ট দ্বীপটি শ্রীলঙ্কার কাছে হস্তান্তর করলেও বর্তমানে ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও তামিলনাড়ু সরকার এটি ফেরত চাইছে। এই দ্বীপটি কেবল ভৌগোলিক গুরুত্বই বহন করে না, বরং এটিকে ঘিরে স্থানীয় মৎস্যজীবীদের জীবিকা, আঞ্চলিক রাজনীতি এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জড়িয়ে আছে।

১৯৫০-এর দশক থেকেই শ্রীলঙ্কা (তৎকালীন সিলন) কচ্ছতিভু দ্বীপে তাদের দাবি জানাতে শুরু করে। ১৯৬১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু দ্বীপটিকে তুচ্ছ বলে উল্লেখ করে ভারতের দাবি পরিত্যাগ করতে ইচ্ছুক ছিলেন। অবশেষে ১৯৭৪ সালে ইন্দো-শ্রীলঙ্কান সামুদ্রিক চুক্তির মাধ্যমে দ্বীপটি শ্রীলঙ্কার কাছে হস্তান্তর করা হয়, যা ভারত “সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের নিদর্শন” হিসেবে দেখালেও তামিলনাড়ুর মৎস্যজীবীদের জন্য তা বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।

বর্তমানে এই দ্বীপটি ফেরত চাওয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে, বিশেষ করে তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা থেকে শুরু করে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এম. কে. স্ট্যালিন সকলেই কেন্দ্রীয় সরকারকে এই বিষয়ে চাপ দিয়েছেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি এই ইস্যুটিকে সামনে নিয়ে আসে এবং ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটি একটি বড় ইস্যু হয়ে উঠতে পারে।

দ্বীপটি হস্তান্তরের পর থেকে তামিলনাড়ুর মৎস্যজীবীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরা এলাকায় প্রবেশে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী প্রায়শই ভারতীয় জেলেদের গ্রেপ্তার করে, যা দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলছে। এই দ্বীপ নিয়ে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট ও ভারতের সহযোগিতার প্রেক্ষাপটে এই ইস্যুটি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। ভারত সরকার যদি কচ্ছতিভু ফেরত পেতে কূটনৈতিক উদ্যোগ নেয়, তবে তা তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *