বিজয়ের রাতে যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশের গণহত্যা চালানোর বর্ননা দিলেন সারজিস আলম

আমাদের কাছে খুবই নির্মম, ডিস্টার্বিং একটা ভিডিও ফুটেজ এসেছে। এটা একটা ম্যাস কিলিং এর ভিডিও। আগেই প্রথমআলোর বরাতে আমরা জানিয়েছিলাম গতকাল স্রেফ যাত্রাবাড়িতে গুলিবিদ্ধ ৩০ জনের লাশ মর্গে ছিলো।
আমরা ভাবতে চেয়েছিলাম থানায় হামলা থেকে রক্ষা পেতে পুলিশ গুলি ছুড়েছে, কিন্তু যে ফুটেজ আমরা দেখেছি সেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে পুলিশি গুলির মুখে ফ্লাইওভারের পিলার ও রাস্তার আইল্যান্ডের পেছনে ৩০-৪০ জন মানুষ আটকে পরে। অত্যাধিক গুলির কারনে তারা সরতেও পারছিলেন না। এক পর্যায়ে গুলি করতে করতে থানা থেকে প্রায় শতাধিক পুলিশ বেরিয়ে আসে এবং পাগলের মতো গুলি ছুড়তে থাকে।

গুলি ছুড়তে ছুড়তে একটু আগাতেই আটকে থাকা মানুষগুলো দুই পাশেই পুলিশের চোখে পড়ে যায় এবং পুলিশ জাস্ট ব্রাশফায়ার করে তাদের মেরে ফেলে। কেউ কেউ দৌড়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও বেশিরভাগই জটলার মধ্যেই মারা পরেন। একজন গুলি খেয়েও হামাগুড়ি দিয়ে যাচ্ছিলেন তাকেও মেরে ফেলা হয়। এরপরেও কেউ কেউ লুকিয়ে বেচে যান, তাদের মধ্যে একজনকে ধরে (সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত) বেদম মারা হয়, উনি জীবন ভিক্ষা চেয়ে দৌড় দিতেই পেছন থেকে তাকেও গুলি করে মেরে ফেলা হয়।
বিভৎস, বর্বর দৃশ্য। এটা আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধের অংশ। আমরা গতকাল এই থানায় দায়িত্বরত পুলিশদের বিচার চাই। আলাদা করে তাদের বিচার চাই যারা ব্রাশফায়ার করেছে। এদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।

আমরা ঢালাও ভাবে পুলিশের বিপক্ষে কোন কথা বলিনি, আমরা বার বার বলেছি কোথাও পুলিশকে আক্রমণ করবেন না। কিন্তু এটাও বলেছি হত্যাকান্ডে জড়িত সকল পুলিশের বিচার করতে হবে। আমরা জানি চাইলেই বের করা সম্ভব কোন কোন পুলিশ এই ব্রাশফায়ার করেছে।
আশা করছি সেনাবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্তগণ এই পোষ্ট দেখবেন। আপনাদের কাছে ইতিমধ্যে হয়ত ভিডিও ফুটেজ আছে। (তারিখ ৫ আগষ্ট, যাত্রাবাড়ি থানা)
আমরা কোন উসকানি, অশান্তি চাই না দেখে ভিডিওটা আপলোড করলাম না। কিন্তু এটা সরাসরি মানবতাবিরোধী অপরাধ। প্রতিটি হত্যাই মানবতাবিরোধী অপরাধ ছিলো কিন্তু এভাবে ব্রাশফায়ারটা আলাদা ভাবে আঘাত করেছে আমাদের মনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *