নোয়াখালীর মাইজদীতে মা নুরুন্নাহার ও তার মেয়ে প্রিয়ন্তীকে হত্যার পেছনের প্রাথমিক কারণ জানতে পেরেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের মাধ্যমে আটক হওয়া আলতাফ হোসেন ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আলতাফ হোসেন একাই মা ও মেয়েকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছে।
১৪ জুন, বুধবার সন্ধ্যায় নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার বলেন, আলতাফ হোসেন ওমানে থাকতেন। ওমানে থাকা অবস্থায় একদিন রং নাম্বারে ফোনের মাধ্যমে নুরুন্নাহারের সঙ্গে পরিচয় তার। এরপর পর তাদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। আলতাফ হোসেন ওমানে খুব একটা আয় করতে পারছিলেন না। তখন নুরুন্নাহার তাকে ব্যবসার জন্য টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন। আশ্বাস পেয়ে দেশে চলে আসেন আলতাফ হোসেন। কিন্তু নুরুন্নাহার তার আশ্বাস অনুযায়ী অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন নুরুন্নাহারকে। এ সময় তার মেয়ে প্রিয়ন্তী ঘটনা দেখে ফেলায় তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে সেও মারা যায়।
শহীদুল ইসলাম বলেন, আলতাফ হোসেনের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের চর মেহের গ্রামে। তাকে আজ বাসা ভাড়া নেওয়ার কৌশলে আলতাফকে বাসায় ডেকেছিলেন নুরুন্নাহার। আলতাফ দাবি করেন, নুরুন্নাহার তাকে টাকা দেওয়ার জন্য ডেকেছিলেন। কিন্তু বাসায় যাওয়ার পর টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে নুরুন্নাহারের গলায় ছুরি ধরেন আলতাফ। নিজেকে বাঁচাতে পাশের রুমে ঘুমিয়ে থাকা মেয়ে কাছে চলে যান নুরুন্নাহার। সেখানে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নুরুন্নাহারকে হত্যা করেন আলতাফ। ঘটনা দেখে ফেলায় প্রিয়ন্তীকেও ছুরিকাঘাত করা হয়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, আহত প্রিয়ন্তী দৌড়ে দোতলার বাসা থেকে নিচে ভাড়াটিয়াদের বাসায় গিয়ে দরজায় ধাক্কা দিতে থাকেন। ভাড়াটিয়া দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়ন্তী অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। এ সময় প্রিয়ন্তীর পেছনে পেছনে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে আলতাফ হোসেন। কিন্তু তার গায়ে রক্ত লেগে থাকায় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তাকে ধরে ফেলে। পরে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় হত্যা মামলা করেছেন নুরুন্নাহারের স্বামী ফজলে আজিম কচি। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আলতাফকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ১৪ জুন, বুধবার সকাল ১০টার দিকে মাইজদীর গুপ্তাংক বারলিংটন মোড় এলাকার নিজ বাসায় নুরুন্নাহার ও তার মেয়ে প্রিয়ন্তীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান নুরুন্নাহার। পরে প্রিয়ন্তীকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।