ডিরেকটরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইনটেলিজেন্স (ডিজিএফআই) জানিয়েছে ঢাকায় তাদের হাতে কেউ আটক নেই। বুধবার (৭ আগস্ট) সকালে শিরিন হকের নেতৃত্বে মানবাধিকারকর্মীদের প্রতিনিধি দল ঢাকা সেনানিবাসে ডিজিএফআই সদর দপ্তরে যায়।
ডিজিএফআই কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর শিরিন হক ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের বলেন, ‘ডিজিআইএফ জানিয়েছে ঢাকায় এই মুহূর্তে তাদের হাতে কেউ আটক নেই। তারা আমাদেরকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আমন্ত্রণও জানিয়েছেন।’
‘ডিজিআইএফ আরও জানিয়েছে যে তারা যৌথ কমিশন গঠন করে খতিয়ে দেখবেন দেশের অন্যান্য জায়গায় সেনাদের হাতে কেউ গুম হয়ে আছেন কি না।’
ডিজিআইএফের বক্তব্যে ভুক্তভোগী পরিবাররা সন্তুষ্ট নন। আজ দুপুর দেড়টায় তাদেরকে ডিজিএফআইয়ের সদরদপ্তরের সামনে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
২০১১ সালের ৮ ডিসেম্বর গুম হওয়া আতাউর রহমানের স্ত্রী নাদিরা সুলতানা আজ ঢাকায় ছুটে আসেন তার নিখোঁজ স্বামীকে ফিরে পাওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, ‘স্বামী গুম হওয়ার পর ঢাকা ছেড়ে যাই। এখন মাদারীপুরে থাকি। সবাইকে বলেছি ঢাকায় যাচ্ছি মেয়ের বাবাকে ফিরিয়ে আনতে। ভোররাত ৩টার দিকে মাদারীপুর থেকে রওনা হই।’
এদিকে, ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে গুম হওয়া ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) কর্মী মাইকেল চাকমা (৪০) আজ চট্টগ্রামে তার এক বন্ধুর বাসায় ফিরেছেন। তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে একটি সূত্র ডেইলি স্টারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গুম হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তির বিষয়ে ডিজিএফআইয়ের সঙ্গে যখন মানবাধিকারকর্মীরা আলোচনা করছেন ঠিক তখনই দীর্ঘ পাঁচ বছর নিখোঁজ থাকার পর মাইকেল চাকমার ফিরে আসার খবর পাওয়া গেল।
মাইকেলের নিখোঁজ হওয়ার প্রায় এক মাস আগে চট্টগ্রাম থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) কর্মী মায়াধন চাকমাকে (৪২) তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এখনো তার খোঁজ মেলেনি।
ডিজিএফআইয়ের সদরদপ্তরে যাওয়া প্রতিনিধি দলে ছিলেন ‘অধিকার’ সম্পাদক আদিলুর রহমান খান, ‘মায়ের ডাক’র সহপ্রতিষ্ঠাতা সানজিদা ইসলাম তুলি ও শিক্ষাবিদ সিআর আবরার।
শিরিন হক আরও বলেন, ‘তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে এখন সেনাপ্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করব।’
গতকাল ডিজিএফআই জানায়, গুম হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের নির্যাতনের স্থান হিসেবে পরিচিত ‘আয়নাঘরে’ রাখা হয়েছিল তাদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বুধবার জানানো হবে।