বাংলাদেশ থেকে কূটনীতিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছে ভারত

বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশন এবং কনস্যুলেট থেকে কূটনীতিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছে ভারত। তবে ভারতের দাবি অপ্রয়োজনীয় কর্মীদের ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে জরুরি নয়, এমন কর্মীদের তারা ফিরিয়ে নিচ্ছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বুধবার (৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে ভারত তার হাইকমিশন এবং কনস্যুলেট থেকে অপ্রয়োজনীয় কর্মীদের ফিরিয়ে নিয়েছে। একই সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় স্টাফ এবং পরিবারের সদস্যরা বাণিজ্যিক ফ্লাইটের মাধ্যমে স্বেচ্ছায় বাংলাদেশ ত্যাগ করছেন।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ভারতের হাইকমিশন চালু রয়েছে। সেখানে সকল কূটনীতিক অফিস করছেন।

একই খবর বার্তাসংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে প্রকাশ করেছ ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম।

তবে একই সঙ্গে রয়টার্স জানায়, সমস্ত ভারতীয় কূটনীতিক বাংলাদেশে রয়েছেন এবং মিশনগুলো কার্যকর রয়েছে।

ঢাকায় হাইকমিশন ছাড়াও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা ও সিলেটে ভারতীয় অ্যাসিস্ট্যান্ট হাইকমিশন রয়েছে। সেখানেও স্বাভাবিক কাজকর্ম চালু আছে বলে সূত্রের দাবি।

তবে সেই দাবি কতটা গ্রহণযোগ্য সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মঙ্গলবার দেশটির সংসদের উভয় কক্ষে এক বিবৃতিতে দিয়েছেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ভারত আশা করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা ও সিলেটে ভারতীয় দূতাবাস রক্ষায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ করবে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে দূতাবাসের স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হবে।

সেই বিবৃতি ও জরুরি সেবার সঙ্গে জড়িত না থাকা কর্মীদের ফিরিয়ে আনার মধ্য দিয়ে অনেকের ধারণা কর্মীদের নিরাপত্তা সবার আগে দেখছে ভারত। তাই দূতাবাসগুলোয় স্বাভাবিক কাজকর্মও এখন চলছে না।

কিন্তু এই দূতাবাসগুলোর কর্মীদের প্রত্যাবর্তন ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু বলেনি।

এদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র বাংলাদেশে চলমান অস্থিরতা বিবেচনায় বাংলাদেশ-ভারত রেল যোগাযোগ আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকেই কোনো ট্রেন সীমান্ত পাড়ি দেয়নি। এর মধ্যেই অনির্দিষ্টকালের জন্য দুই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা এলো। একইভাবে বন্ধ আছে কলকাতা এবং ঢাকা মধ্যে বাস চলাচল।

ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস ও কলকাতা-খুলনায় চলাচলকারী বন্ধন এক্সপ্রেস ছাড়াও নিউ জলপাইগুঁড়ি চলাচলকারী মিতালি এক্সপ্রেসের সব শিডিউল আপাতত বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ জুলাই থেকেই বন্ধ রয়েছে মৈত্রী এক্সপ্রেস।

পূর্ব রেলের জনসংযোগ কর্মকর্তা কৌশিক মিত্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ১৩১০৮ কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস ও ১৩১১০ ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস আগামী ৭ আগস্ট যাওয়া ও আসার কথা ছিল। কিন্তু সেই ট্রেন দুটির শিডিউল বাতিল করা হয়েছে। শর্তাবলি সাপেক্ষে বাতিল শিডিউলের ভাড়ার সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত দেওয়া হবে।

কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে মৈত্রী এক্সপ্রেস সপ্তাহে পাঁচদিন করে চলে। গত ১৬ দিন ধরেই এই ট্রেন বন্ধ। দুই দেশের মধ্যে মূলত চিকিৎসা, পর্যটন, পড়াশোনা ছাড়াও বিভিন্ন কারণে এই ট্রেনের চাহিদা তুঙ্গে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *