শান্তিরক্ষী বাহিনীকে নিষিদ্ধ করতে লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছে বিএনপি: কাদের

বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করতে লবিস্ট নিয়োগ করেছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমেরিকা, ইউরোপে তারা লবিস্ট নিয়োগ করেছে। সর্বশেষ যে খবর পেয়েছি, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের অপপ্রচারের সঙ্গে তাদের অপপ্রচার একাকার হয়ে গেছে।
বিএনপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে যে বিষয়টি বাইরে অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে দেখা হয়, সেটা হচ্ছে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনী। আমাদের সেনাবাহিনী দেশে দেশে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত, তাদের সেই মিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালকে কাজে লাগাচ্ছে।’

আজ সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে জাতীয় সংকট, বিশ্ব সংকটের সঙ্গে একাকার হয়ে গেছে। অর্থনৈতিক সংকট রাজনৈতিক সংকটের সঙ্গে একাকার হয়ে গেছে।

কাদের বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে এখানে আমাদের দেশে একটা পোলারাইজেশন হচ্ছে এবং একটা ডিভাইসিভ অ্যাটিটিউড গড়ে উঠছে। এখানে পরস্পরবিরোধী মতের প্রদর্শন হচ্ছে। আমরা আশা করছি, দেশে শান্তিপূর্ণভাবে আমরা জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারব।’

বিএনপির নেতৃত্বে একটি মহল এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘তারা নিজেরা ব্যর্থ হয়ে এখন বিদেশি শক্তিকে কাজে লাগাতে চায়। বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার তারা করছে।’

কাদের বলেন, ‘এই প্রথম একটা স্বাধীন নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে। ’৮৫-এর আগে নির্বাচন কমিশন ছিল প্রধানমন্ত্রী অফিসের অধীনে। এবারই প্রথম একটি নির্বাচিত নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে নির্বাচনব্যবস্থাকে আরও কর্তৃত্বশীল, আরও স্বাধীন করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য সরকারিভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়াটা অতীতে কখনো ছিল না।’

শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে বিএনপির এই নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয় আছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা (বিএনপি) বোঝে শেখ হাসিনার যে জনপ্রিয়তা, এই অবস্থায় নির্বাচন হলে তারা নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারবে না। কাজেই এই নির্বাচনটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার, বাধাগ্রস্ত করা—এটা হলো এখন তাদের কাজ। এই কাজ করতে গিয়ে তারা বিদেশিদের কাছে নালিশ করছে।’

নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানোর কথা জানিয়ে কাদের বলেন, ‘আপনারা আসুন, বিএনপি আপনাদের কাছে যেটা নিয়ে নালিশ করে সেই নির্বাচনটা বাংলাদেশে কীভাবে হচ্ছে, কয়েকটা সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছে, সেগুলো কীভাবে হয়েছে; এটা বিভিন্ন দেশের দূতাবাস আছে, তাদের লোকজন আছে তারা প্রত্যক্ষ করেছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন বিএনপির ব্যাপারটা হচ্ছে, আমরা নির্বাচনে হেরে আমাদের প্রমাণ করতে হবে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। বিএনপি না জিতলে এই নির্বাচন কখনো অবাধ হবে না, কোনো দিন অ্যাকসেপ্টেবল (গ্রহণযোগ্য) হবে না, বিশ্বাসযোগ্য হবে না।’

এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে ‘প্যাথলজিক্যাল লায়ার’ আখ্যা দিয়ে কাদের বলেন, ‘এত মিথ্যা কথা বলতে পারে। কুত্তা নির্বাচন বলে তারা। কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা যদি মিনিমাম গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাহলে কুত্তা নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার মুখে আসে? শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে? এই কথাটা আমি উইথড্র করতে বলেছি। এই ধরনের কথা তাদের মুখে আসে।’

দলের আগামী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ইউনিয়ন থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে উদ্‌যাপনের কথা জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সাদামাটা অনুষ্ঠান হবে এবং মাসব্যাপী অনুষ্ঠান হবে।

২২ জুন নির্বাহী কমিটির সভা
২২ জুন নির্বাহী কমিটির সভার কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সভায় দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে। যে নেতাদের বিভাগীয় দায়িত্ব দিয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকে রিপোর্ট নেবেন। কোথাও কোনো সংকট থাকলে সে ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত দেবেন।

কাদের বলেন, ‘মিটিংয়ে জেলায়-জেলায়, উপজেলায় আমাদের দলের কিছু কর্মসূচি ঠিক করা হবে এবং কিছু কিছু জেলাকে পর্যায়ক্রমে ঢাকায় আমন্ত্রণ করে তাদের বিভিন্ন জায়গায় যে সমস্যা সে সম্পর্কে অবহিত হবেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *