লেখক-গবেষক ও বামপন্থী রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, এখনো আওয়ামী লীগের অধীন নির্বাচন হলে যেভাবে আমলা-পুলিশের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, এতে কোনোভাবেই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হবে না। তাদের তাড়াতে হবে। বিএনপি বলছে, আওয়ামী লীগের অধীন নির্বাচনে যাব না। বিএনপিকে বলতে হবে, নির্বাচন করতে দেব না।
‘গণতন্ত্রের সংগ্রাম ও সংবাদপত্র’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বদরুদ্দীন উমর এসব কথা বলেন। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সভার আয়োজন করে গণসংস্কৃতি ফ্রন্ট।
এখনো আওয়ামী লীগের অধীন নির্বাচন হলে যেভাবে আমলা-পুলিশের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, এতে কোনোভাবেই এখানে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হবে না বলে মন্তব্য করেন বদরুদ্দীন উমর। তিনি বলেন, তাদের যেতে হবে, তাদের তাড়াতে হবে। তাদের অধীন কোনো নির্বাচন করা যাবে না।
বিএনপি বলছে, আওয়ামী লীগের অধীন নির্বাচনে যাবে না এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন করতে হবে, তা ঠিক বলে মনে করেন বদরুদ্দীন উমর। তিনি বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচন করব না, এটা বলছে। নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না, এ কথা বলছে না।
‘আসলে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না, এই আওয়াজ তুলতে হবে। বলতে হবে যে নির্বাচন করতে দেব না। নির্বাচনের আগে থেকে আওয়াজ তুলব, জনগণকে সংগঠিত করব এবং জনগণ নিয়ে সব নির্বাচনী কেন্দ্র ঘেরাও করব, নির্বাচন হতে দেব না— এভাবে বলতে হবে। না হলে নির্বাচন করব না বলে বসে থাকলে আওয়ামী লীগ আগের মতোই নির্বাচন করে বসে যাবে।’
‘আওয়ামী লীগ বলছে, বিরোধীরা নির্বাচন বানচাল করতে চায়’ উল্লেখ করে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ‘অবশ্যই নির্বাচন বানচাল করতে হবে। তোমরা নির্বাচন বানচাল করোনি ১৯৯৬ সালে? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তোমরা তো আন্দোলন করেছিলে। এমন আন্দোলন হলো যে সেখানে শুধু নির্বাচন বাতিল হলো তা-ই না, বিএনপির মন্ত্রিসভার সবাইকে পদত্যাগ করতে হলো। তারপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলো। এখনো তা-ই করতে হবে।’
সংবাদপত্র দমন করা হচ্ছে বলেও মনে করেন বদরুদ্দীন উমর। তিনি বলেন, শুধু সংবাদপত্র নয়, সবকিছুই দমন করা হচ্ছে। পরস্পরের সঙ্গে সব কটিই যুক্ত। আজকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার যে আন্দোলন, তা জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত, তার থেকে আলাদা করা যাবে না।
সামগ্রিকভাবে জনগণের ওপর যে আক্রমণ হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে যদি লড়াই না করা যায়, এই পুরো পরিস্থিতি যদি বোঝা না যায়, তা হলে এই সংগ্রাম করে লাভ হবে না।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান ও নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীর।
গণসংস্কৃতি ফ্রন্টের সমন্বয়ক ইফতেখার আহমেদের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ লেখক শিবিরের সভাপতি হাসিবুর রহমান।