ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম সুমনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
হত্যাচেষ্টা, প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার (গতকাল) ঢাকার ১ম অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকরের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মামলাটি দায়ের করেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনের মা।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি নাজমুল ইসলামকে ওএসডি করে বরিশালে বদলি করা হয়। তবে দীর্ঘদিনেও তিনি সেখানে যোগ দেননি। সর্বশেষ বরিশালে যোগ দিলেও পুনরায় ছুটিতে চলে যান।
ডিবির সাবেক এই গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন সময় বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইউনিটে কর্মরত থাকাকালে তিনি সরকারবিরোধী মতামত দমন করতে নানা কৌশল অবলম্বন করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী সরকারের সমালোচনামূলক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট মুছে ফেলতে মানুষজনকে আটক, হুমকি এবং নির্যাতনের মাধ্যমে বাধ্য করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সাংবাদিকদের ক্ষেত্রেও একই রকম অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারবিরোধী বা তার অপছন্দের কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করলেই সংশ্লিষ্ট সংবাদকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ এনেছেন একাধিক ব্যক্তি।
২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার নেত্রী লুৎফুন নাহার লুনা জানান, একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে তাকে ব্যক্তিগতভাবে ম্যাসেজ দিয়ে হুমকি দেন নাজমুল। আন্দোলনের সময় রিমান্ডে নিয়ে মানসিক নির্যাতনেরও শিকার হন তিনি।
নাজমুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হল শাখার সভাপতি ছিলেন বলে জানা গেছে। ফেসবুকে তার রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট মন্তব্য তাকে একজন দলীয় নেতা হিসেবেই উপস্থাপন করত।
এর আগেও সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের (উত্তর) এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে এক পোশাক ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্যাতন ও জোরপূর্বক ৭৬টি চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়। ঢাকার দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে মামলাটি করেন ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান।
মামলার আবেদনে নাজমুলসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশের আরও তিন সদস্যের বিরুদ্ধে ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের’ অভিযোগ আনা হয়েছে।