মানুষের কষ্ট লাঘবের লক্ষ্যেই তিস্তা নিয়ে বিএনপির রাজনীতি: তারেক রহমান

তিস্তা নদীকে কেন্দ্র করে অতীতে বহু রাজনীতি হয়েছে, তবে বিএনপির রাজনীতি শুধুমাত্র দেশের মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাঘবের লক্ষ্যেই— এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) লালমনিরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে কেন্দ্রীয় বিএনপির আয়োজনে দিনব্যাপী এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, “তিস্তা নদীকে ঘিরে প্রায় তিন কোটি মানুষের জীবন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত হয়। কখনো অতিরিক্ত পানি, আবার কখনো তীব্র পানি সংকটে ভোগেন এ অঞ্চলের মানুষ। এ নদী নিয়ে আমাদের করণীয় রয়েছে। খাল খনন, নদীশাসন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ সুবিধা এবং পানির সংরক্ষণ—সবকিছু নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপি সরকার গঠনের সুযোগ পেলে এই কাজগুলো যেকোনো মূল্যে শুরু করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “তিস্তা বিএনপির অন্যতম অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প। অতীতে এই নদী নিয়ে অনেক রাজনীতি হয়েছে, কিন্তু আমরা সেই রাজনীতি করি যা দেশের মানুষের কষ্ট লাঘবে সহায়ক হয়। এখানকার মানুষকে বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পানির সংকট মোকাবিলা করতে হয়। আমরা এই দুর্ভোগ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে চাই।”

প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তারেক রহমান বলেন, “তিস্তার পানি কখনো অতিরিক্ত হয়ে বন্যার সৃষ্টি করে, আবার শুষ্ক মৌসুমে পানি সংকটে কৃষকেরা চরম সমস্যায় পড়েন। তাই তিস্তা নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি, যাতে কৃষক প্রয়োজনমতো পানি পেতে পারেন এবং সেচ ব্যবস্থায় উন্নয়ন আসে।”

তিনি বলেন, “আমরা পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করব, যাতে শুষ্ক মৌসুমে কৃষকেরা সেই পানি ব্যবহার করতে পারেন। বিএনপি সরকার গঠন করলে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।”

বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য নিয়েও বক্তব্য দেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, “লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, চট্টগ্রাম কিংবা কুষ্টিয়ার মতো অঞ্চলের রয়েছে নিজস্ব সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য। এই বৈচিত্র্যই আমাদের ঐতিহ্য। বিএনপি সরকার যখনই দায়িত্ব পেয়েছে, তখনই দেশীয় সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।”

তিনি উল্লেখ করেন, “গত ১৭ বছরে বহু সংস্কৃতিকর্মী আর্থিক কষ্টে ভুগেছেন, চিকিৎসা না পেয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সময় অনেক সংস্কৃতিকর্মীকে সহায়তা করা হয়েছিল। ভবিষ্যতেও আমরা এই বিষয়গুলোকে আমাদের নীতিনির্ধারণে অগ্রাধিকার দেব। প্রাথমিক শিক্ষায় সংস্কৃতি ও খেলাধুলাকে অন্তর্ভুক্ত করে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ নিশ্চিত করা হবে।”

তারেক রহমান আরও বলেন, দেশের জনগণের স্বার্থে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের লক্ষ্যে বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরা, নেওয়াজ হালিমা আরলি প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *